‘ওই ট্যাকা দে’, টাকা না দিলে যাব না’ এমন জোর আবদারের সঙ্গে রাজধানীবাসীর সবাই কম-বেশি পরিচিত। রাস্তাঘাটে, শপিংমলে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, ফুটপাতে কোথায় নেই তাদের দৌরাত্ম্য?
এমনকি বাসাবাড়িতে, বিয়ে অনুষ্ঠানে কিংবা যে কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানেও তাদের উৎপাত দিন দিন বাড়ছেই।
হিজড়াদের সাহায্যের নামে চাঁদাবাজি নিয়ে ‘হিজড়া চাঁদাবাজের অসহনীয় দৌরাত্ম্য’ শিরোনামে প্রতিমঞ্চ বিভাগে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। বছরের পর বছর গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও কার্যত কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।
সমাজে অসহায় হিসেবে সাহায্যের জন্য মানুষের কাছে হাত পাতে হিজড়ারা। মানুষও স্বেচ্ছায় সাহায্য করত তাদের। কিন্তু এখন আর সে দৃশ্য নেই। এখন যেন পেশাদার চাঁদাবাজের ভূমিকায় রাজধানী চষে বেড়াচ্ছে হিজড়া বাহিনী! সম্প্রতি চাঁদাবাজি নিয়ে নিজেদের দ্বন্দ্বে প্রাণ হারিয়েছেন একজন হিজড়া। কাজেই হিজড়ারা যে সহিংস হয়ে উঠছে এ বিষয়ে সন্দেহ নেই।
রাজধানীর বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে গত কয়েকদিনে হিজড়াদের টাকা সংগ্রহের চিত্র দেখা গেছে। টাকা দিতে যারা অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন তাদের নানাভাবে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে।
রাজধানীর শাহবাগ, পান্থপথ, মিরপুর-১০, চন্দ্রিমা উদ্যান সিগন্যালসহ প্রায় সব সিগন্যালেই সদলবলে চলে হিজড়াদের চাঁদাবাজি। অনেক সময় ভাংতির কথা বলে নিয়ে নেয় বড় বড় নোট।
চলমান বাসেও জোরজবরদস্তি করে চলে হিজড়াদের চাঁদা সংগ্রহ। রেজাউল কবির নামে এক যাত্রী যুগান্তরকে বলেন, সম্প্রতি তিনি পাবলিক বাসে করে শাহবাগ থেকে মিরপুর যাচ্ছিলেন; পথে হুট করে বাসে উঠে পড়ে একদল হিজড়া। তারা বাসের প্রতি আসনে যেয়ে যেয়ে টাকা তুলছিল।
যে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তাকেই তারা বাসভর্তি যাত্রীর সামনে অপদস্থ করেছে। একযাত্রী তাদের এমন আচরণের প্রতিবাদ করে টাকা দেবে না বলে জানালে তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে। পরে নিরূপায় হয়ে টাকা দিতে বাধ্য হন ওই যাত্রী।
হিজড়াদের দাবি, তারা চাঁদাবাজি করে না। কারণ অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদাবাজি আর জীবনের জন্য হাততালি দিয়ে চাঁদাবাজি এক নয়।
পাঠকের মতামত